অবশেষে খোলা হলো স্পেন ও পর্তুগালের সীমান্ত
পর্তুগাল-স্পেনের সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছে। তিন মাসের বেশি সময় পরে গতকাল বুধবার দুই দেশের সীমান্ত খুলে দেওয়া উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ এবং প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সজা এবং প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিও কস্তা।
পর্তুগালের পোর্তালেগ্রে জেলার ক্যাসেল অব দ্য রাইন্না সিটি অব এলভাসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। এ যেন এক গভীর আবেগঘন মুহূর্ত, এ যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা।
দুই দেশের সরকারপ্রধানদের উপস্থিতিতে বর্তমান মহামারির প্রেক্ষাপটে সীমান্ত খুলে দেওয়া নিয়ে একটি আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
কারণ আমাদের প্রজন্মের মধ্যে কখনোই দুই দেশের মধ্যে সীমানা বন্ধ হয়নি এবং আমাদের পুনরায় সীমানা খোলার প্রয়োজনও হয়নি, এখানে অবস্থিত দুর্গগুলো বহু শতাব্দী ধরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরাই নিজেদের করে নেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং সে জায়গায় আজ দুই দেশকে কাছে টানার জন্য আমরা একত্র হয়েছি।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, পর্তুগালের জনগণ আমাদের ভাই এবং তাদের জন্য আমাদের (স্পেনের) যথেষ্ট আবেগ রয়েছে, পর্তুগাল এবং স্পেন যৌথভাবে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। তিনি পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন।
পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিও কস্তা বলেন, পর্তুগাল ও স্পেনের সর্বোচ্চ নেতাদের উপস্থিতিতে সীমানা খুলে দেওয়ার বিষয়টি দুই দেশের থেকে ইউরোপের প্রতি একটি ইতিবাচক বার্তা উপস্থাপন করে এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে সীমানা খুলে দেওয়ার বিষয়টি হুমকি নয় বরং দুই দেশের উন্নয়নের জন্য একটি সুযোগ।
অ্যান্তোনিও কস্তা আরও যোগ করেন, বিশ্ব এবং আইবেরিয়ান পেনিনসুলা একটি নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে এবং এটি স্পষ্ট যে আমাদের অবশ্যই বেঁচে থাকার জন্য যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে এবং কাউকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে বাঁচতে শিখতে হবে, তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।
স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী খুব জোরালোভাবে বলেন, মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় পর্তুগালের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তীব্রতর হয়েছে এর মাধ্যমে এটি ইঙ্গিত দেয় যে এ–জাতীয় মহামারির প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য একটি শক্তিশালী স্টেট গঠনের প্রয়োজন রক্ষা করেছে, তিনি আরও বলেন যে প্রথম মিনিট থেকে আমরা কোভিড-১৯–এর লড়াইয়ের জন্য ঐক্যের দাবি জানিয়েছিলাম।
পর্তুগাল এবং স্পেনের ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো। একসময় দুই দেশের মধ্যে পৃথিবীব্যাপী সাম্রাজ্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ১৬৪০ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া যুদ্ধ ২৮ বছর পর ১৬৬৮ সালে শেষ হয়। তবে এর মধ্যে ফ্রান্স এবং ডাচ কিছুটা সময় যুক্ত ছিল।
পরবর্তী সময়ে ১৭৭৬-৭৭ সালে এবং ১৮০৭ কিছুটা দ্বন্দ্ব দেখা দিলেও পরবর্তী সময়ে তেমন কোনো জটিলতা দেখা দেয়নি, এবং ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংগঠিত হওয়ার পূর্ব থেকে দুদেশের মধ্যে চরম সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল। এ অঞ্চলের সমষ্টিগত উন্নয়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুই দেশেরই সহযোগিতামূলক মনোভাব এবং প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হওয়ার পর তারও বেশি দৃঢ় হয়েছে।
তথ্য সূত্র : দৈনিক প্রথম আলো
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/hajjncomewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5143caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/hajjncomewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5143
Leave a Reply