বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
হজ-ওমরাহ সহজ করতে ‘নুসুক’ চালু করল সৌদি সরকার ওমরাহ পালনে সৌদি গেলেন ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ৩ বেবিচক কর্মীসহ আটক ৫,শাহজালালে ৩৭ ভরি সোনা জব্দ সিন্ডিকেটের দখলে ওমরাহ টিকিট ,বিমান বাড়িয়েছে টিকিট প্রতি ৭ হাজার টাকা : নামসহ টিকিট বিক্রির দাবি আটাবের ৩৮ ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা লেটস ফ্লাই ফিতরা বাড়ীর জেরে ৮ হজ এজেন্সিকে শোকজ মক্কায় হজ এজেন্সির মালিক ছেলে গ্রেফতার হজ নিবন্ধন বাতিল করেছেন ৫৬১ হজযাত্রী সৌদি আরবের হজযাত্রীদের ভিসার জন্য বায়োমেট্রিক শুরু ১৬ এপ্রিল ৮০ দিনে বিশ্বভ্রমণ দুই বৃদ্ধা বান্ধবীর শাহজালালে কোটি টাকার পরিত্যক্ত স্বর্ণ উদ্ধার
নোটিশ :
হজ-ওমরাহ সহজ করতে ‘নুসুক’ চালু করল সৌদি সরকার ওমরাহ পালনে সৌদি গেলেন ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ৩ বেবিচক কর্মীসহ আটক ৫,শাহজালালে ৩৭ ভরি সোনা জব্দ সিন্ডিকেটের দখলে ওমরাহ টিকিট ,বিমান বাড়িয়েছে টিকিট প্রতি ৭ হাজার টাকা : নামসহ টিকিট বিক্রির দাবি আটাবের ৩৮ ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ১০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা লেটস ফ্লাই ফিতরা বাড়ীর জেরে ৮ হজ এজেন্সিকে শোকজ মক্কায় হজ এজেন্সির মালিক ছেলে গ্রেফতার হজ নিবন্ধন বাতিল করেছেন ৫৬১ হজযাত্রী সৌদি আরবের হজযাত্রীদের ভিসার জন্য বায়োমেট্রিক শুরু ১৬ এপ্রিল ৮০ দিনে বিশ্বভ্রমণ দুই বৃদ্ধা বান্ধবীর শাহজালালে কোটি টাকার পরিত্যক্ত স্বর্ণ উদ্ধার

সিন্ডিকেটের কবজায় ওমরাহর টিকিট

আনোয়ার আলদীন, দৈনিক ইত্তেফাক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২
Umrah tickets held by the syndicate
Umrah tickets held by the syndicate

করোনা অভিঘাত-উত্তর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার এবং ভিসা সহজীকরণের পর বাংলাদেশ থেকে পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরব গমনে মুসল্লিদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সঙ্গে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী ঈদের ছুটি কাটিয়ে ফিরছেন সৌদি কর্মস্থলে। ফ্লাইট সীমিত। ফলে টিকিটের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। এই মওকায় জেদ্দা এবং মদিনা রুটে বাংলাদেশ বিমানের টিকিট সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা টিকিটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সৌদি আরবের জেদ্দা ও মদিনা রুটের ৭৫ হাজার টাকার টিকিট বর্তমানে বিক্রি করছে ১ লাখ ৩৬ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়।

ওমরাহ যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় নিয়মনীতি ভঙ্গ করে অগ্রিম বুকিং দেখিয়ে এই দুই রুটের সেপ্টেম্বর মাসের সব টিকিট ব্লক করেছে পাঁচ-ছয়টি ট্রাভেল এজেন্সি। অভিযোগ রয়েছে, তাদের এই সিন্ডিকেটে জড়িত আছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কয়েক জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এই সিন্ডিকেটে টিকিট দুর্নীতিতে দুই বছর আগে বরখাস্ত একজন কর্মকর্তা অন্যতম ভূমিকা পালন করছেন বলে দাবি করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের-আটাব নেতৃবৃন্দ।

আটাব মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ বলেন, দেড় মাস আগেই বিমানের সৌদি আরবগামী সেপ্টেম্বরের সব টিকিট বিক্রি হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। করোনা মহামারির দুই বছর পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী কর্মী ছুটিতে দেশে আসার পর ছুটি শেষে তারা বিদেশের স্ব স্ব কর্মস্হলে ফিরে যাচ্ছেন। হজ কোটা অর্ধেক করার কারণে ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যাও বিপুল হারে বেড়েছে। এ জন্য সাউদিয়া ও বিমানের টিকিটের চাহিদা বেড়েছে। বিমানের সৌদিগামী ফ্লাইটের নামহীন সকল অবৈধ টিকিট বাতিল করতে হবে। সরাসরি এজেন্সির কাছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় টিকিট বিক্রির ব্যবস্হা নিতে হবে। ওমরাহযাত্রীদের চাপ কমানোর জন্য ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে অতিরিক্ত ফ্লাইট চালু করতে হবে।

বিমান প্রদত্ত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ঢাকা থেকে জেদ্দা ও মদিনা রুটের সেপ্টেম্বর মাসের ইকোনমি ক্লাসের কোনো টিকিট নেই। কেউ যদি সেপ্টেম্বরে বিমানের টিকিটে জেদ্দা রুটে যেতে চায় সেক্ষেত্রে তার ভাড়া পড়বে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৯৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর মদিনা রুটের বর্তমান ভাড়া ১ লাখ ৩৬ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অথচ চলতি মাসে এ ভাড়া দেখাচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ হাজার টাকা।

বর্তমানে বিভিন্ন এজেন্সি সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকায় ১৫ দিনের ওমরাহ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তারা জানান, বিমান কর্তৃপক্ষ ত্বরিত ব্যবস্হা না নিলে সেপ্টেম্বরে এই প্যাকেজ ২ লাখ টাকার বেশি পড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বিমানের টিকিট কাটার জন্য নির্দিষ্ট যাত্রীর নাম ও পাসপোর্ট নম্বর প্রয়োজন হলেও বিমান কর্মকর্তাদের যোগসাজশে পাঁচটি ট্রাভেল এজেন্সি কোনো যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর বা অন্য কোনো কাগজপত্র জমা না দিয়েই জেদ্দা ও মদিনা রুটের গ্রুপ টিকিট কেটে নিয়েছে। প্রথমে বিমানের বিপণন ও বিক্রয় শাখার কয়েক জন কর্মকর্তা জেদ্দা এবং মদিনা রুটের ইকোনমি ক্লাসের প্রায় ২ হাজার ২০০ টিকিট বিক্রি করেছেন। ঐ এজেন্সিগুলো সেই টিকিট বিভিন্ন হজ এজেন্সির কাছে ৯৬ হাজার থেকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। এই এজেন্সিগুলো ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে। জেদ্দা ও মদিনা রুটের টিকিট ব্লকে পাঁচটি এজেন্সির সন্ধান পেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এগুলো হলো-কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড (নয়া পল্টন), রয়েল এয়ার সার্ভিস সিস্টেম (নয়া পল্টন), ইন্যামন অ্যাভিয়েশন লিমিটেড (মতিঝিল), স্টার হলিডেজ (পুরানা পল্টন), দোলা ফকির এয়ার সার্ভিস (তোপখানা রোড)।

সহস্রাধিক টিকিট বুকিং দিয়ে অগ্রিম খরিদ করার বিষয়ে কাজী এয়ার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক কাজী মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, এটা পুরোনো সিস্টেম, নতুন কিছু নয়। আমরা নিয়ম মেনেই বিমান থেকে গ্রুপ বুকিং করেছি। বিমানের অনেক ফ্লাইটে যাত্রী হয় না। ফলে বিমান আমাদের একসঙ্গে গ্রুপ টিকিট দিয়ে থাকে। আমরা সম্পূর্ণ নগদ টাকা দিয়ে টিকিট খরিদ করি।

তবে গতকাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্হাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, নাম ও তথ্য ছাড়া কোনো টিকিট দেওয়া হয়নি এবং নিয়মানুযায়ী বিমানের সেলস সেন্টার থেকেই টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। পাশাপাশি অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমেও টিকিট বিক্রি অব্যাহত আছে। ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বিমানের ভাড়া স্তরভেদে ৭৫০ ডলার হতে ৯০০ ডলার।

এদিকে ব্রাইট ট্রাভেলসের মালিক মো. রুহুল আমিন মিন্টু জানান, বিমানের মতিঝিল অফিসের সেলস শাখার কয়েক জন কর্মকর্তা দেড় মাসের টিকিট নামে বেনামে সিন্ডিকেট চক্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এতে ওমরাহ এজেন্সির মালিকরা বিমান অফিসে ধরণা দিয়েও ওমরাহ যাত্রীদের কোনো টিকিট পাচ্ছে না। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় বিমানের বিপণন ও বিক্রয় বিভাগের সহকারী ব্যবস্হাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ মেহেদী হাসানকে তাত্ক্ষণিক সেই বিভাগ থেকে বদলি করা হয়েছে। বিমানের ডিস্ট্রিক্ট সেলস অফিসের মহাব্যবস্হাপক (জিএম) আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্হা হচ্ছে কি না, তা জানাতে অপারগতা জানান বিমানের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা।

টিকিট নিয়ে দুর্নীতির কারণে আশরাফুলকে ইতিপূর্বে বিমান থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তার নামে মামলাও রুজু করা হয়। ২০১৯ সালের তদন্তে বিমানের ততকালীন মার্কেটিং ও সেলস বিভাগের মহাব্যবস্হাপক আশরাফুল আলমকে টিকিট নিয়ে দুর্নীতির প্রধান দোষী হিসেবে সাব্যস্ত করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আশরাফুল আলম অনলাইনে টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেন। অতঃপর কতিপয় ট্রাভেল এজেন্টের সঙ্গে যোগসাজশে সিন্ডিকেট করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বিমানের টিকিট ব্লক করে কালোবাজারে বিক্রির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পকেটস্হ করেন। এর ফলে বিমানের বহু আসন ফাঁকা অবস্হাতেই উড়াল দিত, কিন্তু যাত্রীরা টিকিট পেতেন না। টিকিট বিক্রির অনিয়মের কারণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল বিমান। 

তদন্ত কমিটির সুপারিশে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিমান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার পদচু্যতির পর বিমান পুরোপুরি অনলাইন টিকিট সিস্টেম চালু করেছিল। এর ফলে বিমানের টিকিটের বিক্রি ও আয় বাড়ে। তবে আবু সালেহ মুস্তফা কামাল বিমানের ব্যবস্হাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার এক মাসের মাথায় আশরাফুলকে দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হয়। এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও আশরাফুল বহালতবিয়তে আছেন। 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আশরাফুলকে কেবল ভর্ত্সনা করে সব রকমের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি দেন বিমানের সাবেক ব্যবস্হাপনা পরিচালক আবু সালেহ মুস্তফা কামাল, যদিও তার সে এক্তিয়ার ছিল না। এ ব্যাপারে আশরাফুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে অপরগতা প্রকাশ করেন।

তথ্য সূত্র ঃ দৈনিক ইত্তেফাক

আমাদের সোস্যাল মিডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর
%d bloggers like this: