হাসিনার আস্থাভাজন ধর্ম সচিবের অপসারণ দাবি
স্বৈরাচারী হাসিনার প্রেতাত্মারা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে এখনো সক্রিয়। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু আব্দুল হামিদ জমাদ্দার ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. বশিরুল আলম ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনকে পাশ কাটিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল রোববার সকাল ১১টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দ্বিতীয় তলায় সভাকক্ষে বিগত হাসিনা সরকারের গঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ ও বাছাই কমিটি-১ আওয়ামী পন্থী কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে সভা শুরু হয়।
স্বৈরাচারী হাসিনার প্রেতাত্মা ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দারের নির্দেশে তড়িঘড়ি করে আওয়ামী সরকারের আমলের কমিটির আওয়ামী ঘরানার লোকজন দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৯ম গ্রেড থেকে তদুর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তাগণের পদোন্নতি/নিয়োগের সুপারিশ প্রণয়নের জন্য এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চূড়ান্তকরণের সভা আহবান করেছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড.বশিরুল আলম। সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসিনার আস্থাভাজন ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ বিতর্কিত সভার আয়োজনে হতবাক হন।
বিতর্কিত পদোন্নতির সভার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্যাতিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নেতা এম এ বারী ও আব্দুল হকের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারীরা বায়তুল মোকারমের চলমান বিতর্কিত আওয়ামী সরকারের গঠিত কমিটির নিয়োগ ও বাছাই কমিটির মিটিং বন্ধ রাখার জন্য সভাকক্ষে ঢুকে আপত্তি জানালে হট্টোগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে ইফার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তোপের মুখে আওয়ামী কর্মচারীদের পদোন্নতির সভা পন্ড হয়ে যায়। হাসিনার প্রেতাত্মা ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার ও ইফার ডিজি বশিরুল আলম তড়িঘড়ি সভা মুলতবি ঘোষণা করে সভাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।
এসময়ে ইফার জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এম এ বারীর সভাপতিত্বে নেতৃবৃন্দ বলেন, হাসিনার দোসর ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দারের নিদের্শে বিগত আওয়ামী সরকারের চেলা চামচাদের তড়িঘড়ি পদোন্নতি দিতেই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ ও পদোন্নতির সভা আহবান করা হয়েছে। উক্ত চিঠিতে দেখা যাচ্ছে বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নয় এমন সিলেকশন কমিটি দিয়ে সভা আহবান করা হয়েছে । কারণ ইসলামিক ফাউন্ডেশন আইন এর ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী বোর্ড যেকোনো কমিটি গঠন করিতে পারিবে। বর্তমানে যে সিলেকশন কমিটি দেখা যাচ্ছে তা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নয়, এমন সিলেকশন কমিটি দিয়ে নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়া বৈধ হবে না ।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন, ইফার সহকারী পরিচালক আবুল কাসেম, আব্দুল হক, আব্দুর রহমান আলম, আবু সাঈদ, মোস্তাফিজুর রহমান, সুলতান উদ্দিন ও আকবর হোসেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, হাসিনার আস্থাভাজন ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেনের কাছে তথ্য গোপন করে এই কমিটির অনুমোদন নিয়েছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। যদি সচিব আইনি বিষয়টি উপদেষ্টাকে না জানিয়ে এরকম একটি কমিটি গঠন করে থাকেন তাহলে সচিবকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে হবে বলে ইফার বঞ্চিত কর্মচারীদের নেতা এম এ বারি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ধর্ম উপদেষ্টাকে অন্ধকারে রেখে হাসিনার দোসর ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার তড়িঘড়ি করে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের নিয়োগ কমিটি দিয়ে আজকে বড় ধরণের কলঙ্কজন অধ্যায় রচনার জন্য কথিত নিয়োগ কমিটির মিটিং ডেকেছিল। তিনি বলেন, পদোন্নতি, ও নিয়োগের জন্য কোনো অনৈতিকভাবে ঘুষ বাণিজ্য হয়েছে কি না তা’খতিয়ে দেখতে হবে।
তিনি অনতিবিলম্বে হাসিনার প্রেতাত্মা ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার ও ইফা ডিজি বশিরুল আলমের অপসারণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনুসের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এদিকে, হাবের সাবেক ঢাকা জোনের মহাসচিব মো.রুহুল আমিন মিন্টু গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, জালিম হাসিনার প্রেতাত্মা ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার এবং ধর্ম মন্ত্রনালয়ের তার সাঙ্গাপাঙ্গরা নতুনভাবে দেশ স্বাধীন হবার পর এতো দিন যাবত কর্মস্থলে কিভাবে বহাল তবিয়তে রয়েছে।
হাসিনার সরকারের আস্থাভাজন এসব আমলারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে ঘাপটি মেরে থাকলে আগামী হজ ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমে বিপর্যয় নেমে আসবে। তিনি বলেন, গত বছর মক্কা-মদিনায় বাংলাদেশি হাজীদের ১% বাড়ী ভাড়ার কোটি কোটি টাকা মক্কাস্থ হজ মিশনের কাউন্সেলর হজ জহিরুল ইসলাম, ধর্ম সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার গংরা লোপাট করেছে। হাজীদের ১% বাড়ী ভাড়ার লোপাটের টাকা উদ্ধার করে হাজীদের মাঝে ফেরত দিতে হবে।
SOurce of News : Daily Inqilab