সৌদিতে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকদের বেতন থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান।
সৌদি সরকারের ‘মজুরী সুরক্ষা প্রোগ্রামে’র অংশ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানীগুলোকে অবশ্যই শ্রমিকদের পাওনা বেতন সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন বাদশাহ সালমান।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- কোম্পানীগুলো তাদের শ্রমিকদের বেতন ঠিক সময়ে পরিশোধ করছে-শ্রম মন্ত্রণালয় এটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঐ কোম্পানীগুলোকে কোন ধরণের অর্থ ছাড় করা যাবে না।মাসের পর মাস ধরে শ্রমিকরা বেতন পাচ্ছে না- এমন অভিযোগ বাড়ার প্রেক্ষিতে বাদশাহ সালমানের এই নির্দেশনা এলো।
এর মধ্যে নির্মাণ খাতে সৌদির সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ‘সৌদি ওজার’ এর হাজার হাজার শ্রমিকের গত ৯ মাস ধরে বেতন না পাওয়ার অভিযোগ আছে। বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য এবং কোম্পানী কর্তৃক উপেক্ষিত হওয়ার প্রতিবাদে এরই মধ্যে জেদ্দার রাস্তায়ও নেমেছে ‘সৌদি ওজার’ এর শত শত প্রবাসী শ্রমিক।
সঠিক সময়ে বেতন পরিশোধের নির্দেশনা ছাড়াও প্রবাসী শ্রমিকদের আবাসন সঙ্কট দ্রুত সমাধানের জন্য, আবাসন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতাও দেয়া হয়েছে শ্রমমন্ত্রীকে। ‘সৌদি ওজার’ নামের প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকদের অভিযোগ, ঐ প্রতিষ্ঠান তাদের সাথে খাদ্য এবং আবাসনের ব্যাপারে বৈষম্যমূলক আচরণ করে। এক্ষেত্রে সৌদি বাদশাহর নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকার থেকে ঐ প্রতিষ্ঠানের যা পাওনা আছে তা থেকে শ্রমিকদের এসব সেবার অর্থ কেটে নেয়া হবে।
সৌদি বাদশাহর নির্দেশনায় প্রবাসী শ্রমিকদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে। বলা হয়েছে, যেসব শ্রমিক তার নিজের দেশে ফিরে যেতে চায় তাদেরকে সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশে পাঠানো হবে এবং সে খরচ বহন করবে ঐ শ্রমিকের নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান। শ্রমমন্ত্রী এসব তদারকি করবেন। এছাড়া শ্রমিকদের পাওনার ব্যাপার স্থানীয় আদালতে সমাধান করতে আইনী সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথেও সমন্বয় করবেন শ্রমমন্ত্রী। এমনকি দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকদের ‘এক্সিট ভিসা’ ইস্যু করে সহযোগিতা করতে পাসপোর্ট বিভাগকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
বাদশাহ সালমানের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে ১০০ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল জমা দেয়া হবে ‘সৌদি আরব ফান্ডে’। এই ফান্ড শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছাড় করা হবে। শ্রম মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত সকল খরচের হিসাব-নিকাশ দেবে অর্থ মন্ত্রণালয়কে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধে সৌদি সরকারের নেয়া পদক্ষেপ নিয়ে শ্রমিক সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করতে শ্রমমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন বাদশাহ সালমান। এমনকি সমস্যাগুলো সমাধানে সৌদি আরবের চেষ্টার ব্যাপারগুলো তুলে ধরতে দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করতে শ্রম মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর তাঁর সৎভাই সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ (৭৯) দেশটির নতুন বাদশাহ হয়েছেন। নতুন বাদশাহ কেমন হবেন, এ নিয়ে সব মহলেই আলোচনা চলছিলো। তাঁর ব্যক্তিজীবন, কর্মজীবন ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে অনেকেরই বেশ কৌতূহল ছিলো।
এর আগে এএফপির খবরে জানানো হয়, প্রায় ৫০ বছর রিয়াদের গভর্নর ছিলেন সালমান। এই সময়ের মধ্যে রিয়াদে ব্যাপক সংস্কারসাধনের কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। আবদুল্লাহর মতো সালমানও নম্র স্বভাবের। কঠোর নিয়ম অনুসরণ, পরিশ্রমী ও নিয়মানুবর্তিতার জন্য তাঁর সুখ্যাতি রয়েছে। রাজ পরিবারের কয়েক শ যুবরাজের দেখভালে তিনি দক্ষতা দেখিয়েছেন। পিঠে অস্ত্রোপচারের পর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাঁকে নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ ছিল। আবদুল্লাহর মতো তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু আবদুল্লাহর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর কর্মকাণ্ড ততটা প্রচার পায়নি। এদিকে সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি যে উদ্যোগ নিলেন তা বেশ প্রশংসনীয়
caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/hajjncomewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5143caller_get_posts
is deprecated. Use ignore_sticky_posts
instead. in /home/hajjncomewsbd/public_html/wp-includes/functions.php on line 5143
Leave a Reply